১৪ বছরেও ইস্টবেঙ্গলের অধরাই থেকে গেল আই লীগ!!
একে একে করে ১৪ টা আইলীগ চলে গেল কিন্তু বদলাল না ইস্টবেঙ্গল এর লীগ ভাগ্য, দেশি-বিদেশি কোন কোচই পারলেন না সমর্থকদের কাছে আই লীগ ট্রফিটি এনে দিতে. . .
৯ এপ্রিল ডার্বিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের কাছে পরাজিত হয়ে শুধু ৩ পয়েন্টই হারায়নি ট্রেভর মর্গান এর ইস্টবেঙ্গল, সাথে সাথে শেষ হয়ে গিয়েছে বিগত ১৩ বছরের মত এই বছরেও আই লিগ জয়ের আশা! যদিও খাতায় কলমে এবং অংকের বিচারে খুবই ক্ষীন আশা আছে এইবারের আই লীগ জয়ের, তারজন্যে নিজেদের বাকি ৩ টে ম্যাচ জেতার সাথে সাথে প্রতিপক্ষ আইজল এবং মোহনবাগান কে পয়েন্ট নস্ট করতে হবে। বর্তমান ইস্টবেঙ্গল দলের যা অবস্থা অতি বড় ইস্টবেঙ্গল সমর্থকও ইস্টবেঙ্গল এর লীগ জয়ের আশা দেখছেন না, বরং তাদের গ্রাস করেছে বিষন্নতা আর সেটাই স্বাভাবিক কারন তাদের এই হতাশা ১ বছর বা ২ বছরের নয় পুরো ১৪ বছরের! আমরা Khelnow.com এর পক্ষ থেকে পর্যালোচনার চেস্টা করেছি কেন এই ব্যর্থতা ইস্টবেঙ্গলে আসুন দেখা যাক।
আগে আসি গত ১৩ বছড়ের কথায়, গত ১৩ বছরে আইলীগ জয়ের জন্যে কোনও কিছু বাদ রাখেননি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা, এই ১৩ বছরে ইস্টবেঙ্গলে খেলেছেন ৬১ জন বিদেশি ফুটবলার, যাদের মধ্যে আছে ইয়াকুবু, পেন, চিডি, ওপারা, র্যান্টি মার্টিন কিংবা বার্ণাড মেন্ডি এর মতো বড় নাম। এই সময়ের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলে খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপার লিও বার্তোস বা অস্ট্রেলিয়ান এ লীগ খেলা মিলান সুসাক কিন্তু দলকে কাঙ্খিত লক্ষে নিয়ে যেতে পারেননি কেউই! এই ১৩ বছরে বাঘা বাঘা বিদেশি কোচ কিংবা হাই প্রোফাইল ভারতীয় কোচরা কোচিং করিয়েছেন এই ক্লাবে, কমবেশি বাকি টুর্নামেন্টে সবাই সফল হলেও আই লীগ এনে দিতে পারেননি কেউ!
এই সময় কোচিং করিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান মার্কোস ফালোপা থেকে শুরু করে বেলজিয়ান ফিলিপ ডি রাইডার বা দেশি সুব্রত ভট্টাচার্য, ডেম্পোর হয়ে ৫ বার লীগ জেতা আর্মান্দো কোলাসো কিংবা ঘরের ছেলে বিশ্বজিত ভট্টাচার্য! কোচের নাম বদলালেও কোন পরিবর্তন হয়নি ইস্টবেঙ্গল এর আইলীগ টেবিলে, কখনও শেষ করেছে ৩ এ আর ২ বার হয়েছে রানার্স! তবে এই ১৩ বছরে একদম ব্যর্থ বলা যাবেনা ইস্টবেঙ্গল কে, তারা এই ১৩ বছরে রেকর্ড টানা ৮ বার কোলকাতা লিগ জয় সহ মোট ১০ বার জিতেছে কোলকাতা লিগ, ৩ বার জিতেছে ফেডারেশন কাপ, ১ টি আইএফএ শিল্ড, ১ বার সুপার কাপ এবং ২ বার তারা আই লীগ এ রানার্স হয়েছে, ২০১৩ সালে এএফসি কাপের সেমিফাইনাল পর্যন্ত গিয়ে শেষে কুয়েত এফ সি এর কাছে পরাজিত হয়, কিন্তু ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ লীগ থেকে গেছে অধরাই!
ফুটবলে কোনও দল ভাল খেললে তার কৃতিত্ব যেমন বর্তায় কোচের উপরে ঠিক তেমনই খারাপ খেললে কোচের দিকেই সবার আগে আংগুল তোলা হয়, আর এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নন ট্রেভর জেমস মরগ্যান!
কিন্তু গত ১৩ বছরের থেকে এইবছর ছবিটা কিছুটা হলেও আলাদা! বিগত বছরগুলিতে যখনই কোন কোচ ব্যর্থ হয়েছেন তাকে 'গো ব্যাক" এর সাথে শুনতে হয়েছে "ব্রিং ব্যাক মর্গান", আর এই মরশুমে তাই সমর্থকদের দাবি মেনেই কর্তারা কোচ করে এনেছিলেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান কে, মাথায় প্রত্যাশার চাপ নিয়ে শুরুটা খারাপ করেননি তিনি কিন্তু শেষে এসে বাকিদের মত ব্যর্থ তিনিও!! এইবছর খাতায় কলমে ইস্টবেঙ্গলএর দল ছিল বাকিদের থেকে শক্তিশালি, দলবদলের মরশুমে কর্তারা সই করান জ্যাকিচাদ, রোমিও, রাউলিন বোর্জেস, রবার্ট, রবিন সিং এর মত বড় নাম!
আইলীগের হাতে দলে যোগ দেন হাইতিয়ান ওয়েডসন, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এর উইলস প্লাজা এবং ৬ ফুট ৩ ইঞ্চির দৈত্য ইভেন বুকেনিয়া। অভিজিত মন্ডল বাদে টিমের বাকি সাপোর্ট স্টাফও ছিল বিদেশি, তবে মর্গ্যান ডু ডং কে ছাটাই করার পরে এশিয়ান কোটায় চতুর্থ বিদেশিটা ইস্টবেঙ্গল এর সমস্যার যায়গায় থেকে যায়!! প্রথমে আসেন কিরঘিস্তান এর ইদের আমিরভ, টিমের সাথে মানিয়ে নিতে না পেরে তার যায়গান মর্গ্যান পরে নিয়ে আসেন অস্ট্রেলিয় ক্রিস্টোফার পেইন কে!
টিম ইস্টবেঙ্গল আই লীগ অভিযান শুরু করে আইজল এর সাথে ড্র দিয়ে কিন্তু ওই ম্যাচের পরে ছন্দ পেয়ে যায় দল টানা জয়লাভ করে ৬ টি ম্যাচে, এই ৬ ম্যাচে গোল করে ১৬ টি এবং হজম করে মাত্র ২ টি। প্রসংগত উল্লেখ্য এর মধ্যে তারা সহজেই ২-১ গোলে হারিয়ে দেয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বেংগালুরু এফ সি কে! এরপরে ডার্বিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনাবাগানের কাছে আটকে যায় তারা, পরের ম্যাচে ১-১ ড্র করে ইস্টবেঙ্গল এর বড়াবড় এর শক্ত গাট লাজং এর কাছে তারপরেই আওয়ে ম্যাচে লাজং এর বিরুদ্ধে আসে মরশুমের প্রথম পরাজয়!
পাহাড়ের কোলে মরশুমের প্রথম পরাজয় আইজল এর বিরুদ্ধে
পরের ম্যাচেই বেংগালুরুর ঘড়ের মাঠেই বেংগালুরুকে ৩-১ গোলে হেলায় হারিয়ে দেয় ইস্টবেঙ্গল,তার পরের ম্যাচে টপকে যায় শক্ত গাট লাজংকেও! এতদিন অবধি লীগ টেবিলের ১ নম্বরেই ছিল লাল হলুদ ব্রিগেড, কিন্তু চার্চিল ব্রাদাসের বিরদ্ধে ঘটে ছন্দপতন! এরপরে লীগ টেবিলের শেষ দল চেন্নাই এর কাছে এগিয়ে থেকেও হেরে যেতে হয়! আর বিরতির পরে আইলীগ শুরু হলে ৭৪৩ দিন বাদে কার্যত বিনা প্রতিরোধেই ২-১গোলে হার মেনে নিতে হয় চিরপ্রতিদন্দী মোহনবাগানের কাছে! পরপর ৩ টে হারে ইস্টবেঙ্গল এখন ১৫ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে লীগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে, উপরের দুটি দলের থেকে ৩ পয়েন্টে পিছিয়ে!
ফুটবলে কোনও দল ভাল খেললে তার কৃতিত্ব যেমন বর্তায় কোচের উপরে ঠিক তেমনই খারাপ খেললে কোচের দিকেই সবার আগে আংগুল তোলা হয়, আর এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নন ট্রেভর জেমস মরগ্যান! তিনি টিমের এই পারফরমেন্স এর জন্য নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে পারেন না। এত ভাল টিম থাকা সত্ত্বেও তিনি মরশুমের অধিকাংশ ম্যাচেই বেঞ্চে বসিয়ে রাখলেন জ্যাকিচাদ, রোমিও, রাউলিন বোর্জেস দের মত জাতীয় দলের ফুটবলারদের! দলে সেরকম ভাবে সুযোগ পাননি হাওকিপ বা ডেভিড এর মতো তরুন প্রতিভারাও!
টিমে এত ভাল উংগার থাকা সত্বেও তিনি উইং প্লে তে কোন জোড়ই দেননি বরং খেলে গেছেন তার চিরাচরিত পদ্ধতিতেই! পারেননি তিনি দলের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরী করতে, যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও দেখা গেছে মেহেতাব - ডিকা এর মত সিনিয়ার প্লেয়ার এর মধ্যে ফ্রি কিক মারা নিয়ে বল মতানৈক্য!! গোয়াতে গিয়ে ভুল করার মাসুল হিসেবে পুরো মরশুম তিনি বসিয়ে রাখলেন উঠতি প্রতিভা অবিনাশ রুইদাসকে তার বদলে নিয়মিত খেলে গেলেন নিখিল পূজারি, যার দৌড়টা ভাল হলেও ফিনিশিংটা নিম্নমানের!
ইস্টবেঙ্গল এর এই ভরাডুবির কারনে অন্যতম কারন তাদের গোলকিপার টি পি রেহেনেশ! চেন্নাই এর বিরুদ্ধে ম্যাচে তার দোষেই ৩ পয়েন্ট হারিয়েছে গোটা দল, ১-০ থাকা অবস্থায় তিনি হজম করেছেন বিশ্রী দুটি গোল যেই গোল কোন পাড়ার টুর্নামেন্ট এর গোলকিপারও সেভ করে দেবে, এরপরে ডার্বিতে বাকি দুটি গোলেই ছিল তার পজিশনিং এর ভুল! চেন্নাই ম্যাচে হতশ্রী পারফমেন্স এর পরেও কোচ সুযোগ দেননি দলের দ্বিতীয় গোলকিপার শুভাসিস রায় চৌধুরি কে! আর মহাগুরুত্বপূর্ন ডার্বি ম্যাচে তো বিদেশিদের মধ্যেই ছিল ডেডিকেশান এর অভাব!
চেন্নাই এর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্রী গোল হজমের পরে টি পি রেহেনেশ
আর সবথেকে চমকপ্রদ তথ্য হল পুরো মরশুম জুড়ে কোন ফিজিকাল ট্রেনারই সই করাননি কর্তারা, ফলে চোটের জন্যে কম বেশি পুরো মুরশুম ভুগতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে! এখন দেখার এই ব্যর্থতায় দায় নিয়ে কি পদত্যাগ করেন অস্ট্রেলিয় কোচ নাকি কর্তারা অপসারন করেন তাকে?বলা বাহুল্য কর্তারা ইতিমধ্যেই অপসারন করেছেন মর্গ্যানের সহকারী হ্যাকেটে কে!
তবে ১৪ বছরের ইস্টবেঙ্গল এর এই ব্যর্থতা সবশেষে তুলে দেয় একটাই প্রশ্ন! এই দায় কার? শুধুই কি কোচের? শুধুই কি প্লেয়ারদের? নাকি এই ব্যর্থতার জন্যে দায়ি আরও কেউ??
Latest News
- I will be here the next season: Andreas Christensen on his Barcelona future
- [WATCH] Isak Ralte's winning goal against Kerala Blasters in ISL 2023-24 Playoffs
- ISL 2023-24 Playoffs: FC Goa vs Chennaiyin FC Live Updates
- How is Des Buckingham doing at Oxford United?
- Emiliano Martinez set to miss UEFA Conference League semi-final first leg against Olympiacos
Trending Articles
- How is Des Buckingham doing at Oxford United?
- Mohun Bagan's Brendan Hamill, Dimitri Petratos distribute gifts to underprivileged children after ISL Shield win
- Indian Sports Calendar April 2024: Events to watch in second week of April
- How Lionel Messi could become minority owner at Inter Miami alongside David Beckham?
- Frank Lampard emerges as surprise candidate to take charge of Canada national team
Editor Picks
- How is Des Buckingham doing at Oxford United?
- Mohun Bagan's Brendan Hamill, Dimitri Petratos distribute gifts to underprivileged children after ISL Shield win
- Top 10 goalkeepers with most clean sheets in Champions League history
- Top 10 most profitable academies in football world
- Top 10 longest penalty shootouts in football history